ওজন কমাতে বাদ দিতে হবে যে ৫ অ’ভ্যাস, জেনে নিন

ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা অনেকের কাছেই একটি কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। প্রতিদিনই নানা রকম লোভনীয় খাবারের প্রলোভন সামনে আসে, যা এড়িয়ে চলা বেশ কঠিন। তবে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের জন্য ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি। নিয়মিত শরীরচর্চা এবং সঠিক খাদ্যাভ্যাসের পাশাপাশি কিছু ছোট ছোট অভ্যাস গড়ে তুললে সহজেই ওজন কমানো সম্ভব। চলুন জেনে নিই, ওজন কমাতে সহায়ক এমনই ৫টি কার্যকর অভ্যাস।

১. রাতের খাবারের পর মদ্যপান একেবারেই নয়
অনেকেই রাতে খাওয়ার পর এক গ্লাস অ্যালকোহল পান করেন অভ্যাসবশত। কিন্তু এটি শরীরের জন্য মোটেই ভালো নয়। বিশেষ করে ওজন কমাতে চাইলে এই অভ্যাস ত্যাগ করতেই হবে। রাতের খাবারের পর অ্যালকোহল হজমক্রিয়া ধীর করে দেয় এবং ঘুমের মানও ব্যাহত হয়। ফলে শরীর পর্যাপ্ত বিশ্রাম পায় না, মেটাবলিজমের গতি কমে যায়, যার প্রভাব পড়ে ওজন বৃদ্ধিতে।

২. পেট পুরোপুরি না ভরে ৮০ শতাংশ খাওয়ার চেষ্টা
খাওয়ার সময় আমরা প্রায়ই বুঝতে পারি না কখন পেট ভরে গেছে। গলা অবধি খেয়ে ফেলি না বুঝেই। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পুরো পেট না ভরে মাত্র ৮০ শতাংশ খেয়ে থেমে যাওয়ার অভ্যাস গড়তে হবে। এতে হজম প্রক্রিয়া ভালো হয় এবং শরীরে অতিরিক্ত ক্যালরি জমে যাওয়ার আশঙ্কা কমে যায়। জাপানের ‘হারাহাচি-বু’ নামে পরিচিত এই অভ্যাসটি দীর্ঘদিন ধরে স্বাস্থ্য রক্ষায় কার্যকর হিসেবে প্রমাণিত।

৩. রাতের খাবারের পর দাঁত মাজা
খাবার শেষ করার পর দাঁত ব্রাশ করা শুধু দাঁতের যত্নেই নয়, ওজন কমাতেও সাহায্য করে। দাঁত মাজার মাধ্যমে মস্তিষ্ক একটি সংকেত পায়—আজ আর কিছু খাওয়া হবে না। ফলে রাতের বেলায় ক্ষুধা লাগলেও খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়। এই সহজ অভ্যাসটি আপনাকে রাতের অতিরিক্ত ক্যালরি গ্রহণ থেকে বাঁচাতে পারে।

৪. প্রোটিনসমৃদ্ধ সকালের নাশতা
সকালের নাশতা দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবার। এই সময় পেট ভরিয়ে খেলে সারাদিন এনার্জি পাওয়া যায় এবং খালি পেটে ফাস্টফুড বা অস্বাস্থ্যকর খাবারের দিকে ঝোঁক কমে। বিশেষ করে প্রোটিনযুক্ত খাবার যেমন ডিম, দুধ, বাদাম, ডাল জাতীয় খাবার সকালে খেলে অনেকক্ষণ পেট ভরা থাকে। এতে দুপুর পর্যন্ত ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে থাকে, যা ওজন কমাতে সহায়ক।

৫. খাবারের আগে স্যুপ খাওয়ার অভ্যাস
দুপুর বা রাতের খাবারের আগে এক বাটি স্বাস্থ্যকর ও হালকা স্যুপ খাওয়া খুবই উপকারী। এতে পেট কিছুটা ভরে যায় এবং মূল খাবারে অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমে। গবেষণায় দেখা গেছে, এই অভ্যাস ক্যালরি গ্রহণ প্রায় ২০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে দিতে পারে। তবে খেয়াল রাখতে হবে, স্যুপটি যেন কম ক্যালরিযুক্ত এবং অতিরিক্ত চর্বিমুক্ত হয়।

ওজন কমানো বা নিয়ন্ত্রণে রাখা কোনো ম্যাজিক নয়, বরং এটি একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। ছোট ছোট কিছু অভ্যাস প্রতিদিনের জীবনে যুক্ত করতে পারলেই বড় পরিবর্তন আনা সম্ভব। এক্ষেত্রে ধৈর্য, সচেতনতা ও নিয়মিত অভ্যাসই হতে পারে আপনার সফলতার চাবিকাঠি।

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *